লম্বা হওয়ার উপায় ও পদ্ধতি জানুন
লম্বা হওয়ার উপায় ও পদ্ধতি জানুন-এই বিষয়ের উপর সহজ ও তথ্যভিত্তিক কিছু আলোচনা করা হলো। লম্বা হওয়ার পেছনে জিন বা বংশগতির বড় ভূমিকা থাকলেও কিছু নিয়ম মেনে চললে উচ্চতা বাড়ানো সম্ভব হতে পারে। পর্যাপ্ত ঘুম শরীরের গ্রোথ হরমোন নিঃসরণে সহায়তা করে, যা উচ্চতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ।
লম্বা হওয়ার চেষ্টা শুধু শরীর নয়, পুরো জীবন ধারার উন্নতির ওপর নির্ভর করে। নিয়মিত ব্যায়াম, সঠিক খাবার ও ঘুম-এই তিনে লুকিয়ে রয়েছে আপনার সম্ভাব্য উচ্চতা বৃদ্ধির চাবিকাঠি। শিশু ও কিশোর বয়সে পুষ্টিকর খাদ্যাভ্যাস উচ্চতা বৃদ্ধির জন্য সবচেয়ে কার্যকর সময়। উচ্চতা বৃদ্ধির কোন ওষুধ গ্রহণের আগেই অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
পেজ সূচিপত্রঃ বিশেষ নিয়ম কানুন এবং গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসা হতে পারে লম্বা হওয়ার উপায়
- লম্বা হওয়া পুরোপুরি জিনগত হলেও কিছু স্বাস্থ্যকর অভ্যাস উচ্চতা বৃদ্ধিতে সহায়ক
- ক্যালসিয়াম,ভিটামিন ডি ও প্রোটিনযুক্ত খাবার শরীরের হারকে শক্তিশালী করে
- পর্যাপ্ত ঘুমানো শরীরের হরমোন নিঃসরণের সাহায্য করে উচ্চতা বাড়ায়
- নিয়মিত স্ট্রেচিং সাঁতার ভুলে থাকা বা যোগব্যায়াম উচ্চতা বৃদ্ধির সহায়ক
- শিশুকালে এবং টিন এজে স্বাস্থ্যকর জীবন যাপন উচ্চতা বৃদ্ধির সহায়ক
- জাঙ্ক ফুড অতিরিক্ত চিনি ও কোল্ড্রিংস উচ্চতা বৃদ্ধির প্রক্রিয়াকে বাধা গ্রস্ত করে
- পর্যাপ্ত পানি পান ও শরীর হাইড্রেট রাখা হাড় ও কোষ বৃদ্ধিতে সহায়ক
- খেলাধুলা করলে শরীর সক্রিয় থাকে ও উচ্চতা বৃদ্ধি পায়
- বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শে গ্রোথ হরমোন বা থেরাপিও নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে সহায়ক
- লেখকের শেষ কথা, মন্তব্য-লম্বা হওয়ার উপায় ও পদ্ধতি সম্পর্কে কিছু বক্তব্য
লম্বা হওয়া পুরোপুরি জিনগত হলেও কিছু স্বাস্থ্যকর অভ্যাস উচ্চতা বৃদ্ধিতে সহায়ক
লম্বা হওয়ার উপায় ও পদ্ধতি সম্পর্কে খুব জানতে হলে বিস্তারিত ভাবে বুঝতে হবে।
লম্বা হওয়া পুরোপুরি জিনগত হলেও কিছু স্বাস্থ্যকর অভ্যাস উচ্চতা বৃদ্ধিতে
সহায়ক-লম্বা হওয়া অনেক অংশে জিনগত বা বংশগত একটি বিষয়। অর্থাৎ মা-বাবার উচ্চতা
অনেকটাই নির্ধারণ করে সন্তানের ভবিষ্যৎ উচ্চতা কতটা হতে পারে। তবে এই জিনগত
সীমাবদ্ধতার মধ্যেও সঠিক খাদ্যাভ্যাস , নিয়মিত ব্যায়াম , ঘুম ও জীবনযাত্রার
ধারা উচ্চতা বৃদ্ধির সম্ভাবনাকে প্রভাবিত করতে পারে-বিশেষ করে শিশু ও কিশোর
বয়সে। কিছু বিষয় আলোচনা করা হলোঃ
- জিনগত প্রভাব
- নিয়মিত খেলাধুলা
- পর্যাপ্ত ঘুম
- দেহ ভঙ্গি ও দেহ ভাষা
মানব দেহে উচ্চতা নির্ধারিত হয় প্রায় ৬০ থেকে ৮০%পর্যন্ত জিনের মাধ্যমে। তাই পরিবারের সদস্যরা যদি লম্বা হন, সন্তানদের লম্বা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তবে লক্ষণীয় বিষয় হল অনুকূল দিন থাকা সত্ত্বেও যদি সঠিক পুষ্টি , ঘুম ও জীবনযাপন না হয় তাহলে কাঙ্খিত উচ্চতা অর্জন নাও হতে পারে। সুস্থ ও লম্বা হওয়ার জন্য বিশেষ কিছু খাদ্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যেমন-প্রোটিন , ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি , আয়রন , জিংক ও ম্যাগনেসিয়াম । প্রতিদিন দুধ , ডিম , মাছ , বাদাম , শাকসবজি ও ফলমূল খাওয়া উচ্চতা বৃদ্ধিতে সহায়ক। ব্যায়াম ও খেলাধুলা হার ও বেশি কে সক্রিয় রাখে এবং হিউম্যান গ্রোথ হরমোন নিঃসরণে সহায়তা করে , যা উচ্চতা বৃদ্ধির জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
ক্যালসিয়াম,ভিটামিন ডি ও প্রোটিনযুক্ত খাবার শরীরের হারকে শক্তিশালী করে
লম্বা হওয়ার উপায় ও পদ্ধতি জানতে-ক্যালসিয়াম , ভিটামিন ডি ও প্রোটিন যুক্ত খাবার শরীরের হাড়কে শক্তিশালী করে। শরীরের হার হচ্ছে আমাদের দেহের কাঠামো। এটি যথা শক্তিশালী হবে , আমাদের চলাফেরা , দৈনন্দিন কাজ ও স্বাস্থ্য তত স্থিতিশীল থাকবে। হাড়ের গঠন ও শক্তি নির্ভর করে মূলত ক্যালসিয়াম , ভিটামিন ডি ও প্রোটিন নামক তিনটি উপাদানের উপর। এইসব কারণে শরীরে ঘাটতি হয় , তাই স্বাভাবিক ভাবে বেড়ে উঠতে পারে না। আর তাই উচ্চতা সঠিক থাকে না। ক্যালসিয়াম যতই থাকুক , যদি ভিটামিন ডি না থাকে তাহলে ক্যালসিয়াম ঠিকভাবে শোষিত হয় না। তাই হাড় শক্তিশালী করার জন্য ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি একসঙ্গে প্রয়োজন। সবদিক যদি ঠিক না থাকে খাবারে যদি অপুষ্টি হয় , তাহলে উচ্চতা বৃদ্ধিতে বাধা সৃষ্টি করবে।
আরো পড়ুনঃ ওজন কমাতে আমরা কি কি খাবার খেতে পারি
একটি বাড়ি নির্মাণের মত-ক্যালসিয়াম হচ্ছে ইট প্রোটিন হচ্ছে বাধন বা ঢালাইয়ের স্ট্রাকচার , আর ভিটামিন ডি হচ্ছে ঠিকাদার , ক্যালসিয়াম সঠিকভাবে সঠিক জায়গায় বসায়। তাই হাড়ের জন্য এই তিনটির একসাথে উপস্থিতি অত্যন্ত প্রয়োজন। শক্তিশালী হাড়ের জন্য কেবল একটি নয় বরং ক্যালসিয়াম , ভিটামিন ডি ও প্রোটিনের যৌথ উপস্থিতি দরকার। যদি বয়স অনুযায়ী উচ্চতা সঠিক না থাকে তাহলে বুঝতে হবে সঠিক খাবার শরীরে ঘাটতি আছে। তাই অবশ্যই এই তিন ধরনের খাবার নিয়মিতভাবে খেতে হবে ।
পর্যাপ্ত ঘুমানো শরীরের হরমোন নিঃসরণের সাহায্য করে উচ্চতা বাড়ায়
লম্বা হওয়ার পদ্ধতি জানতে-পর্যাপ্ত ঘুমানো শরীরের হরমোন নিঃসরণে সাহায্য করে এবং উচ্চতা বাড়ায়। উচ্চতা বৃদ্ধির পেছনে যে জৈবিক প্রক্রিয়া গুলো কাজ করে তার মধ্যে হিউম্যান গ্রোথ হরমোন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এই হরমোন শরীরের কোষ গঠন , হাড়ের বৃদ্ধি ও পেশির গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ঘুমের সময় বিশেষ করে গভীর ঘুমের সময়। হিউম্যান গ্রোথ হরমোন পিটুইটারি গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত হয় এবং এটি হাড়, বেশি ও টিস্যুর বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করে। হিউম্যান গ্রোথ হরমোন এর উপযুক্ত মাত্রা থাকলে বাচ্চা ও কিশোর বয়সে স্বাভাবিক উচ্চতা বৃদ্ধি ঘটে। রাতের ঘুমের সময়-বিশেষত প্রথম কয়েক ঘণ্টায়-শরীর সবচেয়ে বেশি গ্রোথ হরমোন নিঃসরণ করে। গভীর ঘুম না হলে হিউম্যান গ্রোথ হরমোন নিঃসরণ কমে যায়, এর ফলে হাড়ের বৃদ্ধি ধীর হয়ে যায়।
উচ্চতা বৃদ্ধির জন্য ঘুম কতটা দরকার-বয়সভেদে প্রয়োজনীয় ঘুমের
সময়সীমাঃ
শিশু ৫- ১২ বছর - ৯ -১১ ঘন্টা
কিশোর ১৩ -১৮ বছর- ৮- ১০ ঘন্টা
তরুণ ১৮- ২৫ বছর- ৭- ৯ ঘন্টা
বিশেষ করে কিশোর বয়সে পর্যাপ্ত ঘুম না হলে উচ্চতা বৃদ্ধিত।বাধা আসতে পারে। শুধু
ঘুমানোর সময় নয় , ঘুমের মান ও সময় অনুযায়ী ঘুমানো গুরুত্বপূর্ণ। রাত ১০ টা
থেকে রাত ২টার মধ্যে সবচেয়ে কার্যকর হিউম্যান গ্রোথ হরমোন নিঃসরণ হয়। মোবাইল বা
টিভি দেখে ঘুমানো দেরি করলে এই হরমোন নিঃসরণ ব্যাহত হয়। সঠিক বিছানা , শান্ত
পরিবেশ ও ঘুমের রুটিন বজায় রাখা জরুরী।
নিয়মিত স্ট্রেচিং সাঁতার ভুলে থাকা বা যোগব্যায়াম উচ্চতা বৃদ্ধির সহায়ক
- এটি মাংসপেশী ও জয়েন্টের চাপ কমায়
- শরীর নমনীয় হয় এবং সোজা ভঙ্গিতে বেড়ে ওঠে
- বিশেষ করে শিশু ও কিশোরদের জন্য অত্যন্ত উপকারী
- সাঁতার পানির ভাসমান তাহার ও বেশিতে চাপ কমায়
- মেরুদন্ড প্রসারিত ও লম্বা হওয়ার পরিবেশ তৈরি হয়
- নিয়মিত সাঁতার দিলে শরীর ফিট থাকে ও গঠন সুন্দর হয়
- ঝুলে থাকা উচ্চতা বাড়ানোর প্রাকৃতিক ও সহজ ব্যায়াম
- প্রতিদিন ১০ থেকে ১৫ মিনিট ঝুলে থাকলে মেরুদন্ড টানটান হয়
- শিশু ও কিশোরদের জন্য অত্যন্ত কার্যকর
- গ্রোথ হরমোন উৎপাদনের সহায়তা করে
- পেশিও হাড়ের হাড়ের টান বাড়ায়
- দেহভঙ্গি উন্নত করে , ফলে শরীর লম্বা দেখায়
শিশুকালে এবং টিন এজে স্বাস্থ্যকর জীবন যাপন উচ্চতা বৃদ্ধির সহায়ক
- উচ্চতা বৃদ্ধির কিছু তথ্যঃ
- এই বয়সে শরীরের গতি বেশি
- পুষ্টিকর খাবারের গুরুত্ব
- নিয়মিত ঘুম-হরমোন নিঃসরণে সহায়ক
- ব্যায়াম ও খেলাধুলার প্রভাব
- সঠিক ভঙ্গি ও মনোভাব
জাঙ্ক ফুড অতিরিক্ত চিনি ও কোল্ড্রিংস উচ্চতা বৃদ্ধির প্রক্রিয়াকে বাধা গ্রস্ত করে
পর্যাপ্ত পানি পান ও শরীর হাইড্রেট রাখা হাড় ও কোষ বৃদ্ধিতে সহায়ক
- পানি কোষের বৃদ্ধি ও গঠনে ভূমিকা রাখে
- হাড়ের গঠন ও নমনীয়তা বজায় রাখতে সাহায্য করে
- হরমোন নিঃসরণ ও রক্ত সঞ্চালনের সহায়ক
- হজম ও পুষ্টি শোষণের সাহায্য করে
- কতটুকু পানি প্রয়োজন বুঝতে হবে
- পানি না পেলে কি ক্ষতি হয়
খেলাধুলা করলে শরীর সক্রিয় থাকে ও উচ্চতা বৃদ্ধি পায়
বা হওয়ার উপায় ও পদ্ধতি জানতে আমাদের অনেক কিছু জানতে হবে বুঝতে হবে. খেলাধুলা করলে শরীর সক্রিয় থাকে ও উচ্চতা বৃদ্ধি পায়-উচ্চতা বৃদ্ধির জন্য শুধু ঘরের মধ্যে ব্যায়াম করাই যথেষ্ট নয়. খোলা পরিবেশে নিয়মিত খেলাধুলা করলে দেহের শারীরিক কার্যকলাপ ও হরমোন নিঃসরণ বেড়ে যায় , যা উচ্চতা বৃদ্ধির প্রাকৃতিক প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে। একই সাথে মন ও শরীর দুটোই থাকে সতেজ ও সক্রিয়। খোলা জায়গায় খেলাধুলা করলে শরীরের সব অঙ্গ-প্রতঙ্গ কাজ ক যেমন দৌড়ানো , লাফানো , ঝাঁপ দেওয়া। হাত-পা ও মেরুদন্ড প্রসারিত হওয়া। দেহের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পাওয... এসব কার্যকলাপ শরীরকে সচর রাখে এবং হাড়ের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ঘটায় । খোলা মাঠে খেললে সূর্যের আলো থেকে শরীরে তৈরি হয় , ক্যালসিয়াম শোষণ করে হার মজবুত করতে সাহায্য করে।
আরো পড়ুনঃ ওজন বাড়াতে খালি পেটে বিশেষ কিছু খাবার খান
খেলাধুলা করলে শিশু কিশোররা সোজাভাবে দৌড়াই, লাফায় উপরে গিয়ে উঠে দাঁড়াই-এসব অভ্যাস শরীরের ভঙ্গিমা ঠিক রাখে। এটি শরীরকে সোজা , লম্বা ও দৃঢ় করে তোলে। খেলাধুলা শরীরকে ক্লান্ত করে । হলে রাতে ঘুম গভীর ও শান্ত হয়। গভীর ঘুমের সময় হিউম্যান গ্রোথ হরমোন বেশি নিঃসৃত হয় , যা উচ্চতা বৃদ্ধিতে সহায়ক , মানসিক চাপ কমলে হরমোনের ভারসাম্য ঠিক থাকে। বাস্কেটবল , সাঁতার , দড়ি লাফ , ফুটবল , ব্যাডমিন্টন-এসব খেলায় লাফানো , প্রসারন ও ঝুলে থাকার স্বাভাবিক অনুশীলন হয়। কত ঘরের ব্যায়ামের পাশাপাশি ফুলা পরিবেশে খেলাধুলা করা উচিত। খোলা পরিবেশে খেলাধুলা করা উচ্চতা বৃদ্ধির জন্য এক শক্তিশালী অভ্যাস এতে শরীর যেমন সক্রিয় থাকে , তেমনি হরমোন নিঃসরণ ও হাড়ের বৃদ্ধি স্বাভাবিকভাবে ঘটতে পারে।
আপনি গো টাচ বিডি তে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url